নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের সরকারী লিজের সম্পত্তি বাবার কাছ থেকে হেবা দলিলের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে। এ জমির পক্ষে দুটি জাল দলিল তৈরি করে তার দুই ছেলে গত সোমবার সোনারগাঁ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের মাধ্যমে এ জমি রেজিষ্ট্রি করে নেয়। এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার দিনভর ওই এলাকায় তোড়পাড় সৃষ্টি হয়। শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা ভূমি কার্যালয় থেকে ২০২১ সালে পানাম গাবতলী গ্রামের মৃত গহন আলীর ছেলে মানিক মোল্লার নামের পানাম গাবতলী মৌজায় এসএ ৩২, আর এস ৯১,৯২নং দাগে ৪৬ শতাংশ নাল জমি লিজ দেওয়া হয়। এ লিজের শর্ত মেনে তিনি ওই সম্পত্তি ভোগ দখল করেন। সম্প্রতি তার ৭ ছেলের মধ্যে শাহিন মোল্লা ও আজহারুল ইসলাম ওই সম্পত্তি লিখে নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগে। গত সোমবার মানিক মোল্লাকে হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলে সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়ে তার ভাই শামসুজ্জামান ও দলিল লিখক মো. জাকির হোসেনের সহযোগিতায় হেবা দলিল করে ২৪ শতাংশ জমি রেজিষ্ট্রি করে নেয়।
সরকারী সম্পত্তি লিজ গ্রহনকারী মানিক মোল্লা বলেন, সরকারী সম্পত্তি সোনারগাঁ ভূমি কার্যালয় থেকে ২০২১ সালে হস্তান্তর বা স্বত্ত¡ দাবি করতে পারবো না এমন শর্ত মেনে ৪৬ শতাংশ জমি লিজ নিয়েছে। সেই সম্পত্তির ওপর নজর পড়ে আমার ছেলে শাহিন মোল্লা ও আজহারুল ইসলামের। গত এক বছর ধরে এ সম্পত্তি তাদের করে নেওয়ার জন্য পায়তারা শুরু করে।
তিনি আরো জানান, তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার নাম করে তার ভাই সামসুজ্জামান ও ছেলে শাহিন মোল্লা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়ে এ সম্পত্তির বিপরিতে ১৯৭৪ সালের ৩৪০৭০ নং দলিল ও ২০২৩ সালের ১০৬০৪নং দুটি জাল দলিল তৈরি করে আমার কাছে থেকে টিপসই নিয়ে রেজিষ্ট্রি করে নেয়। এ সম্পত্তি আমি ফেরত চাই। এ সম্পত্তি ভোগ দখল করতে হলে আমার সকল সন্তানই ভোগ করবে। কেউ প্রতারণা করে একাই ভোগ করতে এটা করতে দেওয়া হবে না। আজহারুল ইসলাম প্রবাসে থাকলেও শাহিন মোল্লা তার নামসহ দলিল তৈরি করে।
অভিযুক্ত শাহিন মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বাবার কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে এ জমি ক্রয় করেছি। এ সম্পত্তি সরকারী হলে দায় বাবার। এ সম্পত্তি তিনি বিক্রি করেছেন আমাদের কাছে। তবে জাল দলিল তৈরির বিষয়টি মিথ্যা।
দলিল লিখক মো. জাকির হোসেন বলেন, আমাকে দলিলের বিপরীতে দুটি দলিল ও পর্চা দিয়েছে। সেই মোতাবেক দলিল সৃজন করে রেজিষ্ট্রি করেছি।
সোনারগাঁ উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার আ.ন ম. বজলুর রহমান মন্ডল বলেন, এবিষয়টি আমার জানা নেই। দলিল লিখকের যোগসাজসে সরকারী সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি করে থাকলে এ দলিল বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, সরকারী সম্পত্তি কোনভাবেই ব্যক্তির নামে রেজিষ্ট্রি করার কোন সুযোগ নেই। এমন হয়ে থাকলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।